ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া মানবপাচার প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়: এড. সালমা আলী

সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া মানবপাচার প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়: এড. সালমা আলী

কক্সবাজারে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে আইওএমের সহায়তায় আইনজীবী এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে আইনি পরিষেবা সরবরাহ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য এক পরামর্শমুলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজার জেলা পরিষদ হল রুমে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট সালমা আলীর সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় এড. সালমা আলী বলেন, বিএনডব্লিউএলএ জন্মলগ্ন থেকে নারী ও শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি মানবপাচারের শিকার ভিকটিমদের প্রত্যাবাস, পূর্ণবাসন ও আইনগত সেবা দিয়ে যাচ্ছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া মানবপাচার প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় কারণ যারা মানবপাচারের সাথে জড়িত তারা অনেক শক্তিশালী বিশ্বব্যাপি তাদের শক্তিশালী গ্যাং রযেছে, তাই তিনি সরাসরি যারা আইনশৃঙ্খলা দায়িত্বে রয়েছেন তাদেরকে মাট পর্যায়ে আরো বেশী দাযিত্ব ও কর্তব্যের সাথে মানবপাচার প্রতিরোধে কাজ করার আহবান জানান।

সিনিয়র সহকারী জর্জ ও জেলা লিগ্যাল এইড সাজ্জাতুননেচ্ছা লিপি বলেন, কক্সবাজার জেলায় মানবপাচার মাঝখানে কিছুটা কমলেও বর্তমানে আবারা ব্যাপকহারে বেড়েছে এবং মানবপাচাকারীরা আবারো সক্রিয় হয়ে উঠছে। যখন মানবপাচার বিষয়ে কোন অভিযোগ আসে তখন অভিযোগটি গুরত্বের সাথে নেওয়া হয় এবং এর সত্যতা পাওয়া গেলে ভিকটিমকে আইনী সহায়তা দেওয়ার জন্য লিগ্যাল এইড অফিস থেকে আইনজীবী নিয়োগ করা হয়।

জেলা বারের সভাপতি, এড. সিরাজুল ইসলাম বলেন, মানবপাচারের ক্ষেত্রে সব জেলার উর্ধ্বে কক্সবাজার। বর্তমানে কক্সবাজারের মানুষ রোহিঙ্গাদের কারণে অনেক ঝুঁকিতে আছেন এবং তাদের কারণে সাধারণ মানুষ অনেক চাপে। দিন দিন অপরাধ ও মানবপাচার বেড়ে যাচ্ছে। দৈনিক ৫০- ৬০ রোহিঙ্গাদের মামলা দেখতে হয়।

তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালের আইনজীবীরা রাত ১২ টার পরও যে কোন জটিল বিষয়ে ইমেডিয়েট রেন্সপন্স করেন। পাশাপাশি ক্যাম্প ভিত্তিক যারা মানবপাচারের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আরো সোচ্চার হওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ করেন।

র‍্যাব ১৫ অধিনায়ক লেফট্যান্ট কর্ণেল সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমার অনেক জায়গায় কাজ করার অভিজ্ঞতা হয়েছে কিন্তু কক্সবাজার জেলার মত এত বেশী অপরাধ আর কোথাও দেখেনি।

তিনি বলেন, র‍্যাব অপরাধীদের দমন করতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত আসামীদের গ্রেফতার করে থানায় হস্তান্তর করা হচ্ছে। কক্সবাজারে অনেক মানবপাচারের গডফাদারের ইতোমধ্যে হাতে এসেছে। তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। শীঘ্রই তাদের আইনের আওতায় হবে।

নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি, এড. সাকি কাউছার বলেন, মানবপাচারের অনেক মামলা পরিচালনা করেছি। অনেক আসামী আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যায়। মানবপাচারের ক্ষেত্রে পুলিশ যদি আসামীদের ধরতে আরো বেশী সিরিয়াস হয়ে তাহলে একজন ভিকটিম সুরক্ষিত থাকবে এবং আইন অনুযায়ী সাসটেইনেবল লক্ষ্য অর্জন হবে। একজন আইনজীবী মানবপাচার দমন প্রতিরোধ আইন ২০১২ সাল অনুযায়ী একজন পাচারকারী বিরুদ্ধে আইনগত শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য কাজ করতে পারেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, সাগরপথে অবৈধভাবে কম টাকায় বিদেশ যাওয়া সহজ হওয়ায় অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দালালের খপ্পরে পড়ে বাইরের দেশে পাড়ি জমাচ্ছে। তাছাড়া রোহিঙ্গা আসার পর কক্সবাজার জেলায় মানবপাচার আরো বেশী বেড়ে গেছে। ভিকটিমকে সুরক্ষা নিশ্চিত ও মানবপাচারের সাথে জড়িত দালালদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া গেলে মানবপাচার কিছুটা কমবে।

এছাড়া উক্ত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনের পিবিআই এর তৌহিদুল আনোয়ার, বিজিবির মো. ফেরদৌস বিজিবি,কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) সাকিল হোসাইন, উপজেলা আনসার ভিডিপি মো: মোস্তফা, আইনজীবী বিশ্বজিৎ ভৌমিক প্রমুখ।

কক্সবাজার
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত